নেপথ্যে মুখস্থবিদ্যার একটা মহিমা আছে সন্দেহ নেই। কিন্তু যখন একপাক্ষিক গায়ন নয়, সতত জারি করাই আছে যুদ্ধ, তখন তো আর কেবল মুখস্থ জ্ঞান ঝাড়লে হয় না। প্রতি মুহূর্তে নতুন করে পদ বাঁধতে হচ্ছে, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবার জন্য পদবন্ধাকারেই আরেকটা প্রশ্ন ছুড়তে হচ্ছে। এই সহজাত কবিত্বে তাঁদের প্রতি যারপরনাই শ্রদ্ধাবিনত হতে হলো। মনে হলো, এ ক্ষমতা অপরিসীম। বাক্যে-বাক্যে, কখনো তা সম্ভব না হলে অবশ্যই পরের বাক্যের সাথে একটা বলপ্রয়োগহীন অন্ত:মিল থাকছেই। সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য হলো এর স্ফূর্তিটা। পরে জেনেছি এসব কবিতার সবই তাঁরা তৎক্ষণাৎ বানান না, এর কিছু কিছু আগেই তৈরি করা, সময়মতো যা উপস্থাপন করেন মাত্র। তবে উপস্থাপিত সব পদই যে তা নয়, সেটা বোঝা যায় তাৎক্ষণিকভাবে উত্থাপিত প্রশ্নের সাথে সংগতি স্থাপনের উপযোগিতা দেখে। এসবে যথেষ্টই পারঙ্গম মনে হলো তাঁদের, যে স্ফূর্তি নবীন কবিতাকর্মী আমার তখনো নেই (এখনো কি আর আছে!)। ... ...
"ক্যান আই আসক ইউ এ কোয়েশ্চেন?' আচমকা এই সময়ে এই প্রশ্নে আমার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটে। তাকিয়ে দেখি আমার এক সহযাত্রী আমাকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করছেন। ইনি ঢাকা থেকেই আমাদের সাথে এসেছেন প্রায় ২০ জনের একটি দল নিয়ে। প্রথম থেকেই লক্ষ্য করছি বাসের আসন দখল নিয়ে ক্ষণে ক্ষণে অন্যদের সাথে তারা বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন। তাদের প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন আমার কাছে প্রথম দিনই ব্যতিক্রম লেগেছিল কারণ সেগুলো অন্যদের মত পোস্টার পেপারে হাতে লেখা না বরং "ডিজিটাল প্রিণ্ট' করে আনা। আমার প্রশ্নবোধক চোখে তাকিয়ে থাকা দেখে প্রশ্নকর্তা আবার বললেন, "আপনার পোশাক আশাক চাল চলন "ইউরোপিয়ানদের' মত। কাল রাতে দেখলাম আপনি স্মোকিংএও অ্যাডিকটেড। আমি কি আপনাকে প্রশ্ন করতে পারি?' সাধারণত বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে অতি আগ্রহী পুরুষদের যেভাবে আমি উত্তর করি সেভাবে মুখটা শক্ত করে তাকে বললাম, "না আপনি প্রশ্ন করতে পারেন না।' ভয়ে আমার বুকটা ঢিপ ঢিপ করছিল আর মনে মনে ভাবছিলাম, "আল্লাহ তুমি আমাকে এই লোকের হাত থেকে বাঁচাও।' আমার প্রার্থনা শুনেই যেন বাসের অপর মেয়ে সহযাত্রীটি বাসে উঠল তখন। মেয়েটিরও পরনে ছিল "পশ্চিমা' ধাঁচের পোশাক মানে জিন্সের প্যান্ট আর টি-শার্ট। তার সাথে তার ছাত্র সংগঠনের বন্ধুরা। তারা সকালের নাস্তায় খিচুড়ি খেতে না পারা নিয়ে আলাপ করতে করতে যার যার আসনে বসল। বাসটা চলতে শুরু করলে আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯:১০ বাজে। ... ...
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। সে হত্যা একাত্তরে বাংলাদেশের অর্জনকেই হত্যা করার নামান্তর। তার পর থেকেই বাংলাদেশের পাকিস্তানের ভূতের দিকে যাত্রা চলছে। জিয়া এরশাদের সামরিক শাসন, একনায়কতান্ত্রিক শাসন, খালেদা-হাসিনার দায়িত্বহীন রাজনীতি একাত্তরের অর্জনের কাছে আর রাষ্ট্রকে ফেরাতে দিচ্ছে না। মানুষের আশা ভরসার স্থানটি গেছে। এখন মানুষ আশঙ্কা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছে না। নানাবিধ বিভেদের শিকার হচ্ছে। আবার বাংলাদেশের মানুষ আত্মপরিচয়ের সংকটে পড়ে গেছে। এর পিছনে বঙ্গবন্ধুরও কিছু ভুল রাজনীতি ছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ অগ্রজ ইতিহাসবিদ প্রফেসর সালাহ্উদ্দিন আহমদ সম্প্রতি কিছু কথা বলেছেন বাংলাদেশর লেখক সাংবাদিক মশিউল আলমের সঙ্গে। বর্তমান আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের নানারকম প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ডের কারণে নানারকম প্রশ্ন উঠছে বঙ্গবন্ধুর ভুমিকা, কর্মকান্ড ও আদর্শ নিয়েও। এমনও প্রশ্ন আসছে যে বঙ্গবন্ধু আসলেই বাংলাদেশ চেয়েছিলেন কিনা, কিম্বা স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে তাঁর অবদান আসলেই কতটুকু? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর মেলে মশিউল আলমের নেওয়া প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ সালাহ্উদ্দীন আহমদ-এর সাক্ষাতকারটিতে। সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্য। ... ...
রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন-এ অভিযোগটি অধুনা পাকিস্তানপন্থী কলমজীবীরা করছেন। কিছু কিছু পাকিস্তানপন্থী পত্রিকায় মাঝে মাঝে এ ধরনের রবীন্দ্রবিরোধিতা দেখা যায়। ফরহাদ মজহার রবীন্দ্রনাথে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক ছিদ্রান্বেষণ করেছেন তার "রক্তের দাগ মুছে রবীন্দ্রপাঠ' বইটিতে। সেখানে রবীন্দ্রনাথকে মজহার কোন ছাড় দেন নি। সাদ কামালী নামে একজন গল্পকার-প্রবন্ধকার ফরহাদ মজহারের ধারাবাহিকতায় রবীন্দ্রনাথে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা, মুসলমান বিদ্বেষ, নারী বিদ্বেষ নানাবিধ ত্রুটি খুঁজেছেন। ড: আহম্মদ শরীফও রবীন্দ্রনাথে প্রজা উৎপীড়ন খুঁজেছেন। অবাক কাণ্ড হল এই রচনাকারদের কোথাও "রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন' - এই তথ্যটি নাই। রবীন্দ্রনাথ যে সব শাক সবজি কলাটা মূলোটা খেতেন, দৈ-খৈ কোথা থেকে খেতেন, কাদের ক্ষেতেখামারে সেসব উৎপাদিত হত -- ফরহাদ মজহার এবং সাদ কামালী নানাপ্রকার খাটাখাটুনি করে তাও বের করে ফেলেছেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন -- এই ধরনের রগরগে অতি বিখ্যাত রবীন্দ্রছিদ্রটি তাদের রচনাতে উল্লেখ করেননি। কেন করেননি সেটা একটা কোটি টাকার প্রশ্ন বটে। এই তথ্যটি সঠিক হলে নিশ্চয়ই তারা তাদের রচনাতে উল্লেখ না করে পারতেন না। ... ...
কুষ্টিয়া শহর থেকে মাত্র কুড়ি মিনিটের পথ শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। দেখতে দেখতে গ্রামের রাস্তার আঁকাবাঁকা পথ ধরে ঢুকতে থাকলাম প্রাচীন শহর কুমারখালী উপজেলায় অবস্থিত শিলাইদহ কুঠিবাড়ির দিকে। একসময় গ্রামটির নাম ছিল খোরশেদপুর। এই গ্রাম ঠাকুররা কিনে নেওয়ার আগে এখানে একটি নীল কুঠি ছিল। প্রবাদ এই যে সেই কুঠিতে শেলী নামের এক নীলকর সাহেব ছিল। পদ্মা ও গড়াই নদীর সঙ্গমস্থলে একটি দহ সৃষ্টি হয়েছিল, সেই দহর সঙ্গে শেলীর নাম জুড়ে গ্রামটির নাম দাঁড়ালো শেলীদহ বা শিলাইদহ। ঠাকুরদের জমিদারী দেখাশোনা করার জন্য সেকালে শিলাইদহ, পতিসর ও শাহাজাদপুরে কুঠিবাড়ি ও কাছারিবাড়ি নির্মিত হয়,এরই একটি কুঠিবাড়ি এই শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। কবিগুরু ১৮৯৯ ও ১৮৯০ সালে জমিদারী পরিদর্শনে এলেও ১৮৯১ সালে শিলাইদহে জমিদারী পরিচালনার দায়িত্ব নেন। কুঠিবাড়ি পৌঁছানো মাত্রই আমাদের জানানো হল কুঠিবাড়িতে ঢোকার আগে কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়রের নির্দেশে কুঠিবাড়ির কাছাকাছি অন্য একটি ভবনে আমাদের জন্য দুপুরের খাবারের যে আয়োজন করা হয়েছে তা সেরে নিতে। পেটে খিদে থাকলেও মন কিন্তু পড়ে আছে কুঠিবাড়ির দিকে। কোনোরকম দুগাল খেয়েই দৌড়ে ঢুকেছি সেখানে। ... ...
১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন কমিটি তৎকালীন সাংসদ ও জুম্ম জাতির মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার (এমএন লারমা) পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিসত্ত্বাগুলোকে সংবিধানে অন্তর্ভূক্তির দাবি এবং সংবিধানে পাহাড়িদেরও বাঙালি হিসেবে পরিচিতি দানের প্রতিবাদ বিবেচনায় নেয়নি। ফলশ্রুতিতে গড়ে উঠেছিল আন্দোলন। সে আন্দোলন এক পর্যায়ে সশস্ত্র আন্দোলনে রূপ নেয়। দীর্ঘ তিন দশকের রক্তক্ষয় আর অর্থ সম্পদ ধ্বংসের পর সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানে স্বাক্ষরিত হয় পার্বত্যচুক্তি। সমস্যার কি সমাধান হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরে আদিবাসীরা বলবেন, "না' "না' "না'। আর আওয়ামীলীগ সরকার বলবে "হ্যঁ¡' । ... ...
ভেবেছিলাম লিখবো না, কারণ লিখে খুব কিছু হয় যে সবসময় এমন দাবি করা যাচ্ছে না, এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফাহমিদা বা গণযোগাযোগ বিভাগের মেধাবী ছাত্রী সুতপার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে লেখালেখি থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে এসব লেখালেখি করে নিজে খানিকটা সান্ত্বনা পাওয়া যায় যে ছিলাম আমিও প্রতিবাদে, এর বাইরে খুব যে কাজ হয় তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবুও আজ লিখছি বা বলা ভালো যে না লিখে পারছি না এই অন্তর্গত তাড়না থেকে যে সত্যিই যখন আজ রুমানা দেশে ফিরেছেন তাঁর ডান চোখের আলো ফিরে পাবার শেষ আশ্বাসটুকু ছাড়াই তখন ওই যে আমিও ছিলাম প্রতিবাদে কেবল সেই গোঁয়ার সান্ত্বনাটুকুর জন্যই হয়তো এই লেখা। ভেতরে কোথায় যেন একটা শুভবোধ কাজ করছিলো যে অন্তত এক চোখের আলো তার ফিরে আসবে। সেই শুভবোধের, আশার ক্ষীণ আলোটিও যখন শেষ হয়ে গেলো, তখন আমি সত্যিই কিছু কালোসিধে কথা বলতে চাই। ... ...
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষিকা রোমানা মঞ্জুরের সাথে গত ৫ জুন কি বীভৎস এবং ঘৃণ্য কাজ সংঘটিত হয়েছে সে সম্পর্কে কম বেশি আমরা সকলেই অবগত । কাজেই সে সম্পর্কে আমি নিজে আর বিস্তারিত কিছু বলতে চাইনা, কেবল সম্পূর্ণ বিষয়টিতে আমার নিজের কাছে কিছু অসঙ্গতি চোখে পড়েছে, সেটাই আমি এখানে ব্যক্ত করতে আগ্রহী। প্রথমত, তার সাথে যা হয়েছে সেটা নিয়ে লেখালেখি করতে গিয়ে কিংবা বলতে গিয়ে অনেক জায়গাতেই আমি দেখছি যে বলা হচ্ছে 'তার মত মেধাবী, উচ্চশিক্ষিত একজন নারীর সাথে এরকম ঘৃণ্য কাজ হওয়াটাকে কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না' বা এরকম কিছু কথা। এসব কথার অর্থ কী? তিনি যদি 'মেধাবী' কিংবা 'উচ্চশিক্ষিত' না হয়ে থাকতেন তাহলে কি তার বিরুদ্ধে এই আচরণ গ্রহণযোগ্য হতো ? তিনি যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা না হতেন তাহলে কি এই ভয়াবহ আচরণকে অনুমোদন করা যেত ? যখন কারো প্রতি সহানুভূতি জানাতে গিয়ে এরকম স্পর্শকাতর বিষয়ে 'মেধাবী', 'উচ্চশিক্ষিত' এইসকল শব্দ ব্যবহৃত হয় তখন খেয়াল রাখাটা জরুরি, যে যারা 'মেধাবী' কিংবা 'উচ্চশিক্ষিত' হিসাবে সমাজে সেভাবে পরিচিত নন তাদের সাথে এরকম কিছু হলে তখন সেই বিষয়টা প্রান্তিক হয়ে যায়। আমাদের মনে রাখবার দরকার যে কেউ 'মেধাবী', 'উচ্চশিক্ষিত' হোক না হোক কারো সাথেই এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয় । এখানে ব্যক্তির শ্রেণীগত অবস্থান, সামাজিক অবস্থানের চাইতেও ব্যক্তি স্ব্য়ং বেশী গুরুত্বপূর্ণ , রোমানা মঞ্জুরের সাথে যা হয়েছে সেটা নিয়ে আমরা সকলে যেরকম সোচ্চার সেরকম কিছু আমার বা আপনাদের কারো বোনের সাথে হলেও সকলের সোচ্চার হওয়াটাই কাম্য । এক্ষেত্রে মানুষ নিজে যদি তার সামাজিক অবস্থান , শ্রেণীগত অবস্থানের চাইতে কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায় তাহলে প্রতিনিয়তই এরকম ঘটনা ঘটে যাবার সম্ভাবনা আরো বেশি । দ্বিতীয়ত, রোমানা মঞ্জুরের নিজের যেই শ্রেণীগত অবস্থান, তাতে তার ১০ বছর ধরে স্বামীর অত্যাচার সহ্য করাটাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে তার নিজের গাফিলতি এবং বস্তাপচা কিছু সংস্কার মেনে চলবার অসমর্থনযোগ্য প্রয়াস হিসাবেই দেখতে পছন্দ করব। ... ...
ভাওয়াল কলেজে পৌঁছে দেখি এলাহী কাণ্ড। স্কুলের ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলোকে বিছানার মত ব্যবহার করছেন অনেকে। অনেকে আবার বেঞ্চ সরিয়ে ঘর ফাঁকা করে মেঝেতে কার্পেট বিছিয়ে ঘুমানোর ব্যবস্থা করেছেন। রান্না করা হয়েছে ভাত, ডাল আর ডিমের তরকারি। প্লেট হাতে সারি ধরে দাঁড়িয়েছেন মার্চাররা। আনু স্যার এর মধ্যে আমাকে বললেন, "এই সবে শুরু। সামনে আরো অনেকবার ডিম খেতে হবে।' আমিও একমত হলাম। এতো মানুষের জন্য খাবারের আয়োজন করতে ডিমের মত শস্তা ও সহজ তরকারি আর হয় না। লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার পেতে বেশীক্ষণ লাগে না। কোন রকম হৈ চৈ ছাড়াই খাবার বিতরণ তদারকি করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। আর মার্চাররাও খাবার নিয়ে কেউ বেঞ্চে বসেছেন, কেউ কেউ গোল হয়ে বসেছেন নিজ দলের সাথে স্কুলের মাঠে চাঁদের আলোয়। খেতে খেতে কেউ বা ছোট খাটো সাংগঠনিক মিটিংও সেরে নিচ্ছিলেন। ... ...
বিআইডিএস-এর সাম্প্রতিক (২০০৯) এক গবেষণাতথ্য জানাচ্ছে যে, ২০০২ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত সময়েই বাংলাদেশে ৩৪৫ জন নারী ফতোয়ার শিকার হয়েছেন। ২০০১-এর ২ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চের দেওয়া ফতোয়াবিরোধী এক রায়-এর বলে এ সময়ে বাংলাদেশে ফতোয়া নিষিদ্ধ ছিল। ফতোয়া আইনগতভাবে নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায়ই যদি দেশে এতগুলো ফতোয়ার ঘটনা ঘটে থাকে ... ...
বাবা সত্যি এসে পড়েছেন। ভাইকে ডাকেননি, আমাকে ডেকেছেন। মাও তাড়াতাড়ি হাতটাত মুছে এগিয়ে এসেছেন। বোন ছুটে এসেছে। বাবার সঙ্গে চেন বাঁধা কি সুন্দর কুকুরছানা - কী হবে ওর নাম! তিব্বতীরা এসেছিল। বাবা ভূটান সীমান্ত থেকে একটা উলের কোট আর কুকুরছানা কিনে ট্রেনে বুক করে নিয়ে এসেছেন, আমাদের পুজোর উপহার। মা চা নিয়ে এসে বললেন স্যুটকেসটা কই, ট্রেনের জামাকাপড় ছাড়ো তো আগে, নাও কাপড়টা ধরো। বাবার খেয়াল হলো, তাইতো, কুকুর তো নিরাপদেই এসেছে কিন্তু ওকে গার্ড সাহেবের কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে আর মালপত্র আনা হয়নি। তবে হ্যঁ¡, বোনাসের তিনশো টাকা থেকে দুচারটে জামা কাপড় কিনে নিলেই হবে। বাবা সর্বদাই নিরুদ্বিগ্ন। ওমা, পকেটও ফাঁকা। একটুক্ষণ স্তম্ভিত থেকে মা-ই বললো, পকেটমার হয়ে গেল? ... ...
লেবানিজ কবি খলিল জিব্রান লিখেছিলেন, 'বিদায়ের সময়ই মানুষ বুঝতে পারে তার সত্যিকার ভালোবাসা'। আজম খানের বিদায়ের লগ্নে তাই বুঝতে পারি, তিনি কী ছিলেন। সাংস্কৃতিক এলিটরা তাঁকে নেননি, শিল্পবাদী বুর্জোয়া সংস্কৃতির কাছেও তিনি 'রাস্তার ছেলেই' ছিলেন। এবং রাস্তা থেকে যা উঠে আসে, মুক্তিসংগ্রামের প্রেরণা থেকে যা জাত হয়, তার মধ্যে প্রতিরোধী উপাদান থেকেই যায়। 'ব্ল্যাক পাওয়ার' মতবাদের প্রবক্তা, ত্রিনিদাদীয়-মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ রাজনীতিবিদ কওয়ামে তুরে মনে করতেন, সকল নিপীড়িতের সংস্কৃতি হলো প্রতিরোধের সংস্কৃতি...তাই নিপীড়িত জনগণ থেকে উঠে আসা শিল্পীকে অবশ্যই তার শিল্পের আদলে প্রতিরোধের আদলকে ধারণ করতে হয়'। একাত্তরের বেহাত বিপ্লবের বিপ্লবী, হায় বাংলাদেশের হাহাকার জাগানো আজম খানকে তাই প্রতিরোধী চেতনার শিল্পী হিসেবেই ভাবতে হবে। তাঁকে 'গুরু' বলা হয়, কিন্তু তিনি তার থেকেও বেশি কিছু ছিলেন। সত্তর আর আশির দশকের রাগি কিন্তু সরল যুবকদের দুঃখ, হতাশা, ক্রোধ আর প্রেমযাতনাকে তিনি ব্যক্ত করেছিলেন, হয়ে উঠেছিলেন তাদের ভালোবাসার মানুষ। ... ...
এই চল্লিশজনকে বলা হত চল্লিশ চোর। এই উপাধি দিয়েছিলেন কবি আব্দুল গণি হাজারী। অনেক সইদাতা উত্তরকালে অনেক মূল্যে কলঙ্কমোচনের প্রয়াস পেয়েছেন, অনেকে বাংলার স্বাধীনতার পক্ষে মূল্যবান কাজ করেছেন। কিন্তু সঙ্গতভাবেই 'চল্লিশ চোর'-এর অধিকাংশ মুক্তিযুদ্ধে অনতিপ্রচ্ছন্ন রাজাকার ভূমিকা পালন করেছেন এবং এখনও করে যাচ্ছেন। ... ...
১. পাকিস্তানের জন্মমৃত্যুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ জড়িত। পাকিস্তান শুধু একটা রাষ্ট্র নয়-একটা পন্থাও বটে। এই পাকিস্তানপন্থা মানুষের সম্প্রীতির জায়গাটি ভেঙে দিতে চেয়েছে-চেয়েছে সাম্প্রদায়িক ভেদনীতি চাগিয়ে তুলতে। উদ্দেশ্য বাঙালি নামক একটা বিকাশমান জাতির ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে শেষ করে ফেলা। একটি নিরঙ্কুশ উপনিবেশ কায়েম করার লক্ষ্যে জাতি হিসাবে বাঙালিকে পঙ?গু করে দেওয়া। খুব কঠিন কথা। কিন্তু সরল সত্যি। তারা পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই এই পন্থাটিকে হাজির করে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভেতর দিয়ে। তারা ধর্মকেই রাষ্ট্র গঠনের ও জাতীয়তা নির্ধারণের একমাত্র নীতি হিসাবে গ্রহণ করে। এই নীতির মধ্যেই পাকিস্তানের জন্ম ১৯৪৭ সালে। মৃত্যু ১৯৭১ সালে। এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে পাকিস্তানের ভূতটির আছর দেখা দিচ্ছে। ... ...
শর্মিলার থিসিস বা চিন্তা আর পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ও তার দেশীয় দোসরদের চিন্তা একাকার হয়ে যায়। এ কারণেই শর্মিলা বোসের ইতিহাস এক বিষাক্ত ইতিহাস। তিনি বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসকেই বদলে দিতে চান। তিনি দিচ্ছেন নতুন সৃষ্টিতত্ত্ব বা জেনেসিস। এটাই তাঁর আগ্রহের মূল প্রণোদনা, তাঁর লক্ষ্য এবং এ জন্য তিনি সবচেয়ে স্পর্শকাতর ও অরক্ষিত জায়গায় আঘাত করেছেন। জয়া চ্যাটার্জি বেঙ্গল ডিভাইডেড বইয়ে ১৯৪৭ এর বঙ্গভাগের জন্য ভারতীয় কংগ্রেস এবং হিন্দু সাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদকে দায়ি করেন, দায়ি করেন তাদের সংখ্যাগুরু বাঙালি মুসলমান কৃষকের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি না করার মানসিকতাকে। আর শর্মিলা বোস করেন তার বিপরীত, পাকিস্তান-ভাগের জন্য অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদকে দোষী করেন, কারণ তা সংখ্যালঘু পাঞ্জাবী শাসকদের অধীনস্ততা মানতে চায়নি। জয়া চ্যাটার্জির কাজ যেখানে প্রগতিশীল অবস্থান থেকে ইতিহাসের বিনির্মাণ, শর্মিলা বোসের কাজ প্রতিক্রিয়াশীল জায়গা থেকে বিনির্মিত বিমানবিক ইতিহাস হয়ে ওঠে। কিন্তু বাংলা ভাগ আর পাকিস্তান ভাগ এক ঘটনা নয়। কারণ বাঙালিরা এক জাতি কিন্তু পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অধিবাসীরা ধর্মে এক হলেও জাতিতে এক নয়। শর্মিলা বোস তাঁর ঘোরগ্রস্ত চোখে তাদের এক জাতি ঠাউরেছেন বলেই পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানী উপনিবেশ কায়েম তাঁর চোখে পড়ে না, বাদ পড়ে যায় একাত্তরের আগের ২৪ বছরের বঞ্চনা ও সংগ্রামের ইতিহাস। এজন্য ই স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়ে যায় "গৃহযুদ্ধ' আর হানাদার ও মুক্তিযোদ্ধাদের তিনি এক পাল্লায় তুলে পরিমাপ করেন। কারণ তাঁর পাল্লা একটাই, দৃষ্টিও একরোখারকম সংকীর্ণ। একাত্তরের আগের স্বাধীনতা সংগ্রামকে "বিচ্ছিন্নতাবাদী ষড়যন্ত্র' হিসেবে দেখেন বলেই বাঙালিদের ওপর চালানো গণহত্যা ও গণধর্ষণের অভিযোগ হয়ে ওঠে "অতিরঞ্জন' এবং বাঙালিদের বাড়াবাড়ির "মানবিক' প্রতিক্রিয়া। ... ...
ইতিহাস সাক্ষী, ১৯৭৫ সালের পরে পাহাড়ে গেরিলা গ্রুপ শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়। ওই সময় রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার বিদ্রোহ দমনে ব্যবস্থা নেয়। পাশাপাশি পাহাড়ে আদিবাসী ও বাঙালি জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। সে লক্ষ্যে সমতলের অনেক সেটেলার পরিবারকে দুই একর আবাদি জমি ও পাঁচ একর পাহাড়ি জমি দেওয়ার কথা বলে সরকারি উদ্যোগে তিন পার্বত্য জেলায় পুনর্বাসন করা হয়। সাতের দশকের শেষ ও আটের দশকের প্রথম দিকে বহু সেটেলার পরিবারকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আনা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বন্দোবস্তের নিয়ম ভেঙে সেটেলারদের জমির কবুলিয়ত দেয়। এ কারণে ভূমি বিরোধ সৃষ্টি হয়। ... ...
শর্মিলা বোসের "সিভিল ওয়ার' তত্ত্বের ভুল হলো তা পাকিস্তানকে একটি জাতিরাষ্ট্র ভেবেছে এবং মুসলমানিত্বকে সেই জাতিরাষ্ট্রের ঐক্যসূত্র ধরে নিয়েছে। যে পাকিস্তান মুসলমানদের একজাতি বলেছে, সে নিজেই আবার বাঙালি মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েপ্রমাণ করেছে, তারা এক জাতি নয়। ব্রিটিশ ভারতে মুসলিম ঐক্যটা কংগ্রেসি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সাময়িক রাজনৈতিক কৌশল ছিল, এবং রাজনৈতিক কারণেই হিন্দু জমিদার শ্রেণীর ভীতি অপসারিত হওয়ায় ঐক্যটাও প্রয়োজন হারিয়েছে এবং পাকিস্তান ভেঙ্গে গেছে। একে দেশভাগ বলে না, বলে ভাঙ্গন এবং তা রাষ্ট্রের ভাঙ্গন। এর মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্র পেয়েছে তার আসল রূপ। যে রূপটা বণিক-সামরিক পাঞ্জাবি এলিটতন্ত্রের, যা ব্রিটিশ-মার্কিনের ঔপনিবেশিক জের বহন করছে, ঔপনিবেশিক ব্রিটেন আর সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার উত্তরাধিকার ও রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে কাজ করছে। আর বাংলাদেশের আবির্ভাব এই জোটেরই বিরুদ্ধে। যে কোনো রকম উপনিবেশিকতা ও আঞ্চলিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে ভাষাভিত্তিক, সেক্যুলার, কৃষকমেজাজি জাতিরাষ্ট্র হিসেবে। এটাই নিশ্চয় এই রাষ্ট্রের মকসুদে মঞ্জিল নয়, তবে সেটা অন্য আলোচনা। এখন কেবল এই সত্যটা আমাদের মনে থাকা চাই দ্বিজাতিত্ত্বের মিছা আশা এবং ভারতবর্ষীয় একজাতিতত্ত্বের মায়ার নাগপাশের বাইরে এর আবির্ভাব হয়েছিল। আর মান্য করা চাই যে, এই রাষ্ট্রের ভিত নির্মিত হয়েছে সংগ্রামে, রক্তে, অশ্রুতে আর আগুনে। যার সম্মান ও সার্থকতা আজ অবধি আমরা দিতে পারি নাই। সংশোধনবাদী ইতিহাস চর্চা এরই সুযোগ নিচ্ছে এবং নিতে থাকবে। ... ...
সমাবেশস্থলে পৌঁছে প্রথমেই আমার নজরে পড়ল পথসভায় যোগদানকারীদের পায়ের কাছে পড়ে থাকা হলুদ রঙের গাঁদা ফুলের পাপড়ির ওপর। বুঝলাম জাতীয় কমিটির স্থানীয় কর্মীরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে লং মার্চের যাত্রীদের স্বাগত জানিয়েছেন। খেয়াল করে দেখি শাড়ী পরা, পরিপাটি করে চুল বাঁধা, আর কপালে মেরুন রঙের টিপ পরা একজন তরুণী তখনও একটি ডালা থেকে ফুলের পাপড়ি ছিটাচ্ছেন। ফুল দিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেওয়ার রেওয়াজটি এর আগে আমি বিয়ে আর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে দেখেছি। এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ এটিই আমার প্রথম। তাই এক্ষেত্রেও রেওয়াজটি সাধারণ কি না তা নিয়ে আমার মনে সন্দেহ দেখা দিল। তবে স্কুলে থাকতে টেলিভিশনে দেখতাম, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সামরিক শাসক হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে গলায় ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হত। সে এতো মালা পেত যে তাতে তার মুখ ঢাকা পড়ে যেত। ... ...
স্থানীয়, জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক স্তরে ড: ইউনুসের সমালোচক বা সমর্থক উভয় দলই সংখ্যায় বেশ ভারী। ৫ মার্চ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এজেন্সি, মানবাধিকার সংগঠন, মার্কিন স্বরাষ্ট্র দপ্তর ও অন্যান্যদের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পাঠানো একটি ইমেইলে হাসিনা তনয় সজীব ওয়াজেদ লিখছেন যে বাংলাদেশে ইউনুসের একমাত্র পরিচিতি নোবেল পুরষ্কার প্রাপক হিসেবে। রাজনৈতিক ভাবে তাঁর কোনও অস্তিত্ব নেই। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে বিশাল আর্থিক দুর্নীতি, কর ফাঁকি ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ এনে সজীব জানাচ্ছেন এর প্রত্যেকটিই ফৌজদারি অপরাধ হওয়া সত্বেও বাংলাদেশ সরকার ইউনুসের বিরুদ্ধে কোনওরকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন। সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হল ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের আরও শোষনের হাত থেকে বাঁচানো। ... ...
সিডরের ভয়ঙ্কর আঘাতে যে লাখ লাখ মানুষ সর্বস্ব হারিয়েছে তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল ক্ষুদ্রঋণগ্রহীতা। সম্প্রতি দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে একশনএইড পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৪২টি ক্ষুদ্রঋণদানকারী সংস্থা সেসব অঞ্চলে কাজ করছে এবং ১৫ লাখ মানুষের কাছে প্রায় ১ হাজার ২শ কোটি টাকা ঋণ আছে। এসব সংস্থার মধ্যে ব্র্যাক, আশা ও গ্রামীণ ব্যাংকও আছে। একই গবেষণায় দেখা গেছে, ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ এতই প্রবল ছিল যে, অনেকেই প্রাপ্ত রিলিফ সামগ্রী, সরকার প্রদত্ত গৃহনির্মাণ সুবিধা বিক্রি করে কিস্তি শোধ করেছেন। অনেকে নতুন ঋণ নিয়ে পুরনো কিস্তি শোধ করেছেন। এই চিত্র অস্বাভাবিক বা বিচ্ছিন্ন নয়। গত বছরে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণাপত্রে লামিয়া করিম নাকছাবি গরম্ন, মুরগি, ঘরের টিন, আসবাবপত্র বিক্রি করে ঋণের কিস্তি পরিশোধের একাধিক উদাহরণ দিয়েছেন। এ ধরনের বহু ঘটনার সাক্ষী বহু গবেষক ও সাংবাদিক যার অল্পই প্রকাশিত। ... ...